সম্পাদকীয়--
স্বরধ্বনি শারদীয় সংখ্যা প্রকাশ হতে চলল। এবার শরতের আনন্দ তেমন আর মন থেকে খুঁজে পাচ্ছি কি? জীবন বলতে গেলে মহামারী গ্রস্ত। গৃহবন্দি জীবনের এই দীর্ঘ স্থিরতা তথা অস্থিরতার মাঝে আমরাও যেন কোথাও আটকে আছি ! যেন এক পরাধীন জীবন যাপন চলছে আমাদের। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ঘরের বাইরে পা রাখতে হচ্ছে--সব সময় মুখে বাঁধতে হচ্ছে এক কলুর বলদ ঠুলি। অচ্ছুৎ ভাবনায় দূরে দূরে থাকি, সবারই দেহে যেন ছোঁয়াচে রোগ লেগে আছে !
আর যৌবনকালটাও কতটা বাধিত হয়ে
পড়েছে--প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম করাও যেন বারণ। লুকোচুরি ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা সে তো আজ বাতিলের লিস্টে রাখা আছে। একটা চুম্বনও যেন আজ অন্তরীক্ষে ঝুলে রয়েছে ! হতাশ আজ সব দিক থেকে আমরা। শারদীয় মেজাজটাও আমাদের অনেক খানি বিগড়ে গেছে। প্রকৃতি কিন্তু ঠিকই সেজে আছে আগমনীর অপেক্ষায়। কেবল আমাদের উৎসুকতার গতি তেমন ভাবে ধরা পড়ছে না। তবু আমাদের বাঁচতে হবে, আর সে জন্য মনের খোরাকটাও তো চাই, মার আগমনীর বর্ষবরণ প্রতীক্ষা তো একেবারে শূন্যতায় ফিরিয়ে দিতে পারি না। তোড়জোড় না হলেও চলছে আয়োজন, শত বাধা বিঘ্ন ঠেলে হলেও বাঙালি তার আনন্দ উৎসবে যোগ না দিয়ে পারে না।
বর্তমানে ছাপা পত্রিকার খুবই অভাব--কারণ ওই কোরনার করুণায় আজ নামীদামী পত্রিকাগুলিও তাদের অনলাইন ভার্সন বের করে নিয়েছে। ই-পত্রিকার লোকপ্রিয়তা এখন অনেকটাই ওপরে, বর্তমানে এই
যান্ত্রিক অন্তর্জাল ব্যবস্থাকে অস্বীকার করার অবস্থায় আমরা কেউ নেই। স্বরধ্বনির বর্তমান সংখ্যা তো আমরা অনেক কবিদের সাড়া পেয়েছি। তার মধ্যে জানা-মানা অনেক কবিরা আছেন-- তৈমুর খান, কৌস্তব দে সরকার, কাজল সেন, তপন সাহা, তীর্থঙ্কর মৈত্র, তুষ্টি ভট্টাচার্য, জারা সোমা, দ্বৈতা হাজরা, লুতফুল বারি পান্না, এশরার লতিফ, মাথুর দাস, পশুপতি ভদ্র, নির্মাল্য বিশ্বাস,গৌরী মৈত্র, সীমা ব্যানার্জী রায়, হিল্লোল রায়, শ্যামাপ্রসাদ সরকার, বদরুদ্দোজা শেখু, তুলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রুদ্রাণী রাই প্রমুখ। এ ছাড়া আছেন, নবীন-প্রবীণ অনেক লেখক-কবি যাদের প্রতি পত্রিকার পক্ষ থেকে আমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
কোরনা নিপাত যাক, সুস্থ জীবন ফিরে আসুক, আগামীর উৎসব পূজা-পার্বণে আবার যেন আমরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে এগিয়ে আসতে পারি। সবার সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কামনা করে এবারের মত এই সম্পাদকীয় কথা শেষ করলাম--নিবেদন-ইতি--
সম্পাদক--তাপসকিরণ রায়
সহ-সম্পাদ--শমিত কর্মকার।